অন্যকে ফাঁসাতে গিয়ে ফেঁসে গেল দুই বন্ধু
সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারে বাড়িতে ইয়াবা রেখে অন্যকে ফাঁসাতে গিয়ে ফেঁসে গেছেন দুই বন্ধু। গত বৃহস্পতিবার (২০ মে) রাতে উপজেলার সদর ইউনিয়নের বাজিতপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত যুবকরা হলেন বাজিতপুর গ্রামের হানিফ উল্লাহর পুত্র শফিকুল (৩৫) ও মৃত জমির আলীর পুত্র ফরহাদ আলম (২৮ )।
এ নিয়ে এলাকায় তোলপাড় শুরু হয়েছে এবং নিরীহ ব্যক্তিকে ফাঁসানোর চেষ্টায় ক্ষুব্ধ হয়েছেন এলাকাবাসী। ষড়যন্ত্রের সঙ্গে জড়িত দুই যুবকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে এলাকাবাসী প্রতিবাদ সভা ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন।
জানা যায়, উপজেলার সদর ইউনিয়নের বাজিতপুর গ্রামের মৃত আলকাছ আলীর ছেলে সম্ভাব্য ইউপি সদস্য প্রার্থী সাহাঙ্গীর আলমক (৩৫)। গ্রাম্য রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় তাকে ফাঁসাতে গিয়ে একই গ্রামের দুই বন্ধু শফিকুল ইসলাম ও ফরহাদ আলম মিলে সাহাঙ্গীর আলমের খড়ের ঘরে ১৮৬ পিস ইয়াবা রেখে দেন। এরপর নিজেরাই বিষয়টি র্যাবে জানান। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে র্যাব-৯ সুনামগঞ্জ ক্যাম্পের একটি দল সাহাঙ্গীর আলমের বাড়িতে অভিযান চালায়। কিন্তু ইয়াবা রাখার সত্যতা না পেয়ে ঘটনার সংবাদদাতা ফরহাদ আলমকে ১৮৬ পিস ইয়াবাসহ আটক করে। তবে মূল পরিকল্পনাকারী শফিকুল ইসলাম দৌড়ে পালিয়ে যান।
এ ঘটনায় শুক্রবার সকালে আটককৃত ফরহাদ আলম ও পলাতক সফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে র্যাব-৯ সুনামগঞ্জ ক্যাম্পের নায়ক সুবেদার আইয়ুব নবী বাদী হয়ে দোয়ারাবাজার থানায় মামলা দায়ের করেন। এ ছাড়া ১৮৬ পিস ইয়াবাসহ আটককৃত ফরহাদকে থানায় সোপর্দ করেন।
দোয়ারাবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নাজির আলম বলেন, ‘অন্যকে ফাঁসানোর চেষ্টার অভিযোগে র্যাবের পক্ষ থেকে সফিকুল ইসলাম ও ফরহাদ আলমের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং ফরহাদকে ১৮৬ পিস ইয়াবাসহ থানায় সোপর্দ করেছে। শুক্রবার দুপুরে ফরহাদকে আদালতে মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।’
এদিকে শুক্রবার বিকেলে ইয়াবা দিয়ে নিরীহ সাহাঙ্গীর আলমকে ফাঁসানোর চেষ্টাকারী দুই যুবকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে ছাতক-সুনামগঞ্জ সড়কের শ্যামলবাজারে মানববন্ধন করেছেন এলাকাবাসী।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ‘সাহাঙ্গীর আলম একজন ভালো মানুষ। তিনি স্থানীয় ইউপি নির্বাচনে সদস্য প্রার্থী হওয়ায় দীর্ঘদিন থেকে শফিকুল ও ফরহাদ তাকে নানভাবে বাধা দিয়ে আসছিল। তাদের কথা না শোনায় শফিকুল ও ফরহাদ তার বাড়িতে ইয়াবা রেখে তাকে ফাঁসানোর জন্য নিজেরাই র্যাবকে খবর দিয়ে আনেন। পরে র্যাব ঘটনা বুঝতে পেরে ফরহাদকে আটক করে।’ ঘটনার সঙ্গে জড়িত দু জনের কঠিন শাস্তি দাবি করেন এলাকাবাসী।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, শ্যামল বাজার পরিচালনা কমিটির সাবেক সভাপতি ও সাবেক ইউপি সদস্য আজর আলী, আছদ্দর আলী, হাফিজ চান্দ আলী, শানুর মিয়া, নুর ইসলাম, আবদুল কাদির, শফিকুল ইসলাম মালদার, জমির আলী, ফয়জুন নুর, রাসেল, শাহাব উদ্দিন, আজিজুর রহমান,আলমগীর, সোনামিয়া, মানিক মিয়া, জামাল উদ্দিন, আজরফ চৌধুরী প্রমুখ।
আপনার মতামত জানান